মেহেদি ডিজাইন আজকের ক্লাসের আলোচনার বিষয়। মেহেদি ডিজাইন [Mehedi Design] ক্লাসটি আমাদের বিউটিফিকেশন কোর্সের অংশ। যেকোনো উৎসব পার্বনে মেহেদি আবশ্যকীয় অনুষঙ্গে পরিনত হয়েছে। বিয়ে, মেহেদি সন্ধ্যা, ঈদ, পুজা এমনকি পহেলা বৈশাখ বা ভালোবাসা দিবসেও এখন হাত ভর্তি করে মেহেদি দেয়ার চল চলছে। বিয়ের সাজে অন্যতম আকর্ষন ই যেন ব্রাইডাল মেহেদি। বিয়ের কনে মানেই হাত ভরা মেহেদি। তাই “মেহেদি নকশা [Mehedi Design]” সার্ভিসটি এখন বিউটিশিয়ান প্রশিক্ষণের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একজন বিউটিশিয়ানকে নিশ্চিত করতে হবে যে তার ক্লায়েন্ট যেন তার, রং, ত্বক, ব্যক্তিত্ব, উপলক্ষ বুঝে মেহেদি নকশা [Mehedi Design] করেন। পাশাপাশি এটাও নিশ্চিত করা দরকার তিনি যেন সঠিক মেহেদি টি ব্যবহার করেন এবং সঠিক উপায়ে করেন। সেই সাথে ক্লায়েন্টকে উৎসাহ দিতে হবে ছোট খাট কোন প্রোগ্রামের জন্য যেন তিনি ঘরেই বসে মেহেদি লাগিয়ে নেন, কষ্ট করে আপনার কাছে বা অন্য কোন পার্লার না ছোটেন।
তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে তিনি কিভাবে ঘরে বসেই মেহেদি লাগাবেন। সামান্য কিছু উপকরণ হলে তিনি কিভাবে পেশাদারী বিউটিশিয়ানের মত নিজের কাজটি করে নিতে পারবেন। এতে ক্লায়েন্ট এর আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও আত্মবিশ্বাস বাড়বে, যা আপনার ভবিষ্যৎ মুনাফাকে আরও এগিয়ে দেবে।
মেহেদি ডিজাইন
মেহেদি (Lawsonia inermis, মেহেদী, মেহেন্দী, মেন্দি। ইংরেজিতে হেনা, যা আরবি হিন্না حِنَّاء থেকে এসেছে) এক ধরনের সপুষ্পক উদ্ভিদ, যার পাতা প্রাচীনকাল থেকে ত্বক, চুল, নখ, পশুর চামড়া ও পশম রঙিন করার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই উদ্ভিদের পাতার সাথে অন্যান্য দ্রব্য মিশিয়ে আধা-কৃত্রিম পদার্থ তৈরি করা হয়, সেটাও মেহেদি নামেই পরিচিত। মেহেদির নানা প্রকার ঔষধি গুণাগুণও রয়েছে ।
ব্রোঞ্জ যুগ থেকেই দুনিয়াবাসীরা রঞ্জক হিসেবে মেহেদি ব্যবহার করে আসছে। দুনিয়ার বহু দেশে এটি উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। বাংলাদেশ এবং ভারতে ঈদ ও বিয়ে উপলক্ষে এর ব্যবহার অনেকটা আবশ্যিকরূপে প্রচলিত। ভারতীয় আদালতে চুলের রঙ হিসেবে মেহেদির ব্যবহারের কথা উল্লেখ আছে যেটা প্রায় ৪০০ খ্রিষ্টাব্দের। ছত্রাক-রোধী হিসেবেও মেহেদি কার্যকর। কাপড় ও চামড়া সংরক্ষণেও এর ব্যবহার হয়।

মেহেদি ফুল থেকে সুগন্ধী তৈরি হতো বহু প্রাচীনকাল থেকেই, বর্তমান যুগে এর উৎপাদন আবার শুরু হয়েছে। পোকা দমনেও মেহেদি ব্যবহৃত হয়। লসোন (lawsone) বা ২-হাইড্রক্সি-১,৪ ন্যাপথা কুইনোন নামক এক প্রকার জৈব যৌগের উপস্থিতির কারণেই মেহেদিতে রঙ হয়। মেহেদির পাতাতেই প্রধানত: লসোন থাকে। যে গাছের পাতায় লসোন বেশি সে গাছের ফলে বীজ কম হয়।[৪] মেহেদি পেস্টের পিএইচ মান ৫.৫ হলে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
সাধারন পদ্ধতি
কয়েক মুঠো পুষ্ট মেহেদি পাতা শিলপাটায় মিহি করে বেটে অথবা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিলেই হাত- পা, চুলে ব্যবহার করা যায়।
শিল্পজাত পদ্ধতি
প্রয়োজনমত পুষ্ট মেহেদি পাতা নিয়ে সারাদিন কড়া রোদে শুকিয়ে ব্লেন্ডারে মিহি গুড়ো করে এতে আরো কিছু উপাদান ব্যবহার করে একে শিল্পজাত করা যায়। নিম্নে এর উপাদানের পরিমাণের ক্রম এবং কার্যপদ্ধতি দেওয়া হলো।
প্রয়োজনীয় উপকরণ: ১. পানি, (১ কাপ), ২. কফি / ব্ল্যাক টি (২ টেবিল চামচ), ৩. মেহেদি পাউডার, (৩ টেবিল চামচ), ৪. মেথির গুঁড়া / পাউডার, ( টেবিল চামচ), ৫. ভিনেগার / লেবুর রস (১ টেবিল চামচ), ৬. ইউক্যালিপটাস / এসেনশিয়াল অয়েল (বাধ্যতামূলক নয়), ৭. চিনি।
কার্যপদ্ধতি:
- প্রথমেই মেহেদি পাউডারকে ভালোভাবে ছেঁকে নিতে হবে, যাতে তাতে কোনো আঁশ বা ময়লা না থাকে।
- একটি বাটিতে পানি ঢেলে তাতে চিনি ও কফি পাউডার দিয়ে গরম করতে হবে। কফি পাউডার এর রঙ বেরিয়ে আসলে গরম করা বন্ধ করে তাতে মেহেদি পাউডার ও লেবুর রস মিশাতে হবে।
- মিশ্রণটিকে ভালোভাবে মিশ্রিত করে হবে এবং উৎপন্ন পেস্টটিকে ভালোভাবে সারারাত ঢেকে রাখতে হবে। পরদিন সকালে প্রয়োজনমত এসেনশিয়াল অয়েল বা লেবুর রস নিয়ে পেস্টটিতে মিহি মেথির গুঁড়া ঢেলে নিতে হবে।
- . পেস্টটিকে ভালোভাবে মিশাতে হবে। এবার আবারও ৫-৬ ঘণ্টার জন্য মিশ্রণটিকে ফ্রিজে রাখতে হবে। এতে ৫-৬ ঘণ্টা পর পেস্ট এর উপরের আবরণ বাদামী দেখাবে এবং পেস্ট এর উপরে হালকা বাদামী জলীয় দ্রবণ জমবে।
- এরপর পরিমাণমত মেহেদি টিউবে নিয়ে ব্যবহার করতে হবে বা বাজারজাত করতে হবে।

চুল রিবন্ডিং নিয়ে বিস্তারিত ঃ
আরও পড়ুনঃ